পণ্য ডেলিভারি বিষয়ে মেয়রের হুশিয়ারি অবরোধে চট্টগ্রাম বন্দরে কন্টেইনার জটে রেকর্ড

মহাজোটের ডাকা অবরোধের কারণে পণ্য ডেলিভারি না হওয়ায় চট্টগ্রাম বন্দর ইয়ার্ডে কন্টেইনার জমে থাকার নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে৷ গতকাল সোমবার বন্দরে ডেলিভারির অপেক্ষায় ছিল ২০ হাজার ৫৫৬ টিইইউস কন্টেইনার৷ স্বাভাবিক অবস্থায় ইয়ার্ডের ধারণ ক্ষমতা ১২ হাজার টিইইউস’র কিছু বেশি৷ বন্দর সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, আজকালের মধ্যে দ্রুতগতিতে এসব অতিরিক্ত কন্টেইনার ডেলিভারি না হলে জায়গার অভাবে আমদানি করা পণ্য জাহাজ থেকে খালাসের কাজও বন্ধ হয়ে যাবে৷ এর ফলে দেশের প্রধান এ সমুদ্র বন্দরের কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে৷
বন্দর অবরোধের মূল রূপকার চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মহিউদ্দিন চৌধুরী বন্দর থেকে পণ্য ডেলিভারির যে কোনো প্রচেষ্টার ব্যাপারে ব্যবসায়ীদের আরেক দফা হুশিয়ার করে দিয়েছেন৷ মেয়র বলেছেন, কেউ যদি এমনকি সেনাবাহিনীর সহায়তায় বন্দর থেকে পণ্য ডেলি-ভারি নেয়ার চেষ্টা করে৷ আর মাঝপথে সেই পণ্যের কোনো ক্ষতি হয়, তার দায়-দায়িত্ব বন্দর কর্তৃপক্ষকে নিতে হবে৷
এ ব্যাপারে বিজিএমইএর মঈনউদ্দিন আহমেদ বলেন, মেয়র সাহেব আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী নন৷ মঙ্গলবার অবরোধের শেষ দিন৷ এরপরও যদি এ রকম কোনো কর্মসূচি দেয়া হয়, তাহলে আমরা মেয়রের সঙ্গে দেখা করে বন্দরকে সে কমসূচির বাইরে রাখার অনুরোধ করবো৷
গতকাল সোমবার অবরোধের সময় মহাজোটের বিভিন্ন সমাবেশে মেয়র আরো বলেন, আমার কাছে খবর আছে, কেউ কেউ রাতের অন্ধকারে মালবাহী ট্রেনে করে পণ্য ডেলিভারি নিয়ে যাচ্ছেন৷ বন্দরের ভেতরে লোডিং-আনলোডিংয়ের ব্যবস্থা রেখেছি৷ কিন্তু বন্দর থেকে কোনো পণ্য বের করার চেষ্টা করা হলে হরতাল ও লাগাতার অবরোধ করে চট্টগ্রাম অচল করে দেয়া হবে৷
মেয়রের এই হুশিয়ারির ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে বন্দর সচিব ফরহাদ উদ্দিন যায়যায়দিনকে জানান, মেয়র সাহেব আমাদের মুরব্বি৷ তার প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, ট্রেনে করে পণ্য ডেলিভারি করা হচ্ছে না৷ ট্রেন কন্টেইনার নিয়ে যাচ্ছে ঢাকার কমলাপুরের ইনল্যান্ড কন্টেইনার ডিপোতে (আইসিডি)৷ পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে ব্যবসায়ীরা সেখান থেকে তাদের পণ্য ছাড়িয়ে নেবেন৷
বন্দর সূত্র জানায়, গতকাল অবরোধের দ্বিতীয় দিনেও চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য ডেলিভারির কাজ প্রায় বন্ধ ছিল৷ তবে প্রাণচাঞ্চল্য ছিল জাহাজে পণ্য ওঠানামার ক্ষেত্রে৷ গতকাল রফতানির জন্য জাহাজে উঠেছে ৯৩১ টিইইউস পণ্য এবং জাহাজ থেকে নেমেছে ১০৪৬ টিইইউস পণ্য৷ গত রবিবার ১৭০টি ডেলিভারি অ্যাসাইনমেন্টের মধ্যে ডেলিভারি হয়েছে ৫৫টি অ্যাসাইনমেন্ট৷ আর এর পুরোটাই হয়েছে চট্টগ্রাম শহর এলাকার ভেতরে৷
গতকাল বিকালে বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বন্দর ব্যবহারকারীদের জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়৷ বৈঠকে বন্দর কর্তৃপক্ষ ও সেনাবাহিনীর উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধির পক্ষ থেকে পণ্য ডেলিভারি নেয়ার সময় পর্যাপ্ত নিরাপত্তার আশ্বাস দেয়া হয়৷ তবে ব্যবসায়ীরা এতে খুব একটা আশ্বস্ত হননি বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা গেছে৷
সূত্রঃ http://www.jaijaidin.com/view_news.php?News-ID=25351&issue=187&nav_id=1

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান