দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কর্তৃক ঘোষিত দুর্নীতির দায়ে সন্দেহভাজন ৫০ জনের মধ্যে ৩৪ জন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এবং একদিন পর ডা. ইকবালের পক্ষে তার স্ত্রী মমতাজ বেগম হাইকোর্টের নির্দেশে সম্পদের বিবরণ দাখিল করেন। হিসাব দাখিলকারী মোট ৩৫ জনের সম্পদের বিবরণের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য দুদকের ২০টি টাস্কফোর্স মাঠে নেমেছে। মার্চের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে যাচাইয়ের কাজ সম্পন্ন হবে। বিবরণী ও সম্পদের মধ্যে অসংগতি পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে দুদক মামলা করে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ শুরু করবে।
সম্পদের বিবরণ দাখিল করেননি ১৫ জন। তাদের বিরম্নদ্ধে মালামাল ক্রোক ও সম্পদ বাজেয়াপ্তসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দুর্নীতি দমন কমিশন থেকে মঙ্গলবার সংশিস্নষ্ট মন্ত্রণালয়ে পত্রের মাধ্যমে জানানো হয়। গতকাল গ্রেফতারকৃত সোনালী ব্যাংকের সিবিএ সভাপতি বিএম বাকির হোসেনকে মতিঝিল থানায় সোপর্দ করা হয়। পরে তাকে সিএমএমের আদালতে হাজির করা হলে তার জামিন না-মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়। তাকে এক মাসের আটকাদেশ দেয়া হয়েছে।
এদিকে বিএনপি’র নেতা ও সাবেক এমপি গিয়াস উদ্দিনকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় তিনদিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। ডেমরা এলাকার সাবেক এমপি ও বিএনপির নেতা সালাহউদ্দিন আহমেদকে ৪ দিনের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গতকাল আদালতে প্রেরণ করা হয়। সেখান থেকে তাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়। বাসা থেকে উদ্ধারকৃত বৈদেশিক মুদ্রার তিনি প্রমাণ দেখাতে পারেননি।
প্রথম পর্বের ৫০ জনের বিরম্নদ্ধে আইনের কার্যক্রম শুরম্ন হওয়ায় দ্বিতীয়পর্বের তালিকা চূড়ানত্ম হতে আর কয়েকদিন সময় লাগবে বলে জানা যায়। এই পর্বে তালিকায় যাদের নাম আসছে তাদের সম্পর্কে তিনটি সংস্থা তদনত্ম করে দেখছে। এই তদনত্ম শেষে দ্বিতীয়পর্বের তালিকা চূড়ানত্ম হবে। এই পর্বে কয়েকজন সাবেক শীর্ষ মন্ত্রী ও রাজনীতিবিদ এবং আলোচিত ব্যক্তিসহ কয়েকশ’ নাম থাকবে। ফলে দ্বিতীয়পর্বের তালিকা হবে প্রথমপর্বের চেয়ে ৫ থেকে ৬ গুণ বেশী।
প্রথমপর্বে তালিকাভুক্ত ৫০ জনের মধ্যে ৩৩ জন কারাগারে ও একজন আটক এবং ১৬ জন বাইরে রয়েছেন। এই ১৬ জনের মধ্যে বিএনপি’র নেতা ও সাবেক এমপি রশিদুজ্জামান মিলস্নাত ও জামায়াতের সাবেক এমপি মোঃ শাহজাহান চৌধুরী সশরীরে দুদকে সম্পদের বিবরণ দাখিল করে গেছেন। আটক ৩৪ জনের মধ্যে আলোচিত ব্যবসায়ী গিয়াসউদ্দিন আল মামুন কারাগারে নেই। তার সম্পদের বিবরণও দুদকে জমা পড়েনি। তার পড়্গের আইনজীবী ব্যারিস্টার ফখরম্নল ইসলাম রবিবার দুদকে সম্পদের বিবরণ দাখিল করতে গেলে কর্মকর্তারা বলেন, গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের আটক সম্পর্কে দুদক অবহিত নয়। এই কারণে তার সম্পদের বিবরণ গ্রহণ করা সম্ভব নয়। উক্ত আইনজীবী জানান যে, ৩১ জানুয়ারী গিয়াসউদ্দিন আল মামুন গ্রেফতার হয়েছেন। তিনি একটি সংস্থার হেফাজতে রয়েছেন বলে কর্মকর্তাদের জানান।
সম্পদের বিবরণ দাখিলকারীদের মধ্যে বিএনপি’র ২৬ জন, আওয়ামী লীগের ৮ জন ও জামায়াতের একজন রয়েছেন। যে ১৫ জন সম্পদের বিবরণ দাখিল করেননি কিংবা তাদের প্রতিনিধিকে দুদক গ্রহণ করেনি তাদের মধ্যে ১২ জন আওয়ামী লীগ, ২ জন বিএনপি ও একজন ব্যবসায়ী রয়েছেন। এই ১৫ জনের মধ্যে তিনজন আবুল হাসানাত আবদুলস্নাহ, হাজী মকবুল হোসেন ও বসুন্ধরা গ্রম্নপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান ওরফে শাহ আলম বিদেশে রয়েছেন। Source:দৈনিক ইত্তেফাক
Date:2007-02-28