বিভিন্ন সময়ে দেশ থেকে পাচার হয়ে যাওয়া বিপুল পরিমাণ অর্থ পুনরায় দেশে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে সাতজন অর্থ পাচারকারী ব্যবসায়ীর ২৭০ কোটি টাকা ফেরত আনা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা সমপরিমাণ অর্থ পে-অর্ডারের মাধ্যমে স্থানীয় মুদ্রায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সরকারী কোষাগারে জমা দিয়েছে।
দুর্নীতি বিরোধী অভিযানে গ্রেফতারকৃত একাধিক ব্যবসায়ীকে জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে অর্থ পাচার সম্পর্কিত তথ্য নিয়ে তা ফেরত আনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। একইভাবে পাচারকৃত বাকী অর্থ ফেরত আনার প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, দুই দফায় সংশ্লিষ্টদের নিকট থেকে পে-অর্ডারের মাধ্যমে ২৭০ কোটি টাকা সংগ্রহ করা হয়। প্রথম দফায় ২৩০ কোটি টাকা এবং দ্বিতীয় দফায় ৪০ কোটি সংগ্রহ করা হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফিরিয়ে আনা এসব পাচারকৃত অর্থকে ‘নন ট্যাক্স রেভিনিউ’ হিসেবে অভিহিত করেছে। ইতিমধ্যে এই অর্থ সরকারের কোষাগারে জমা হয়েছে বলে অর্থ মন্ত্রণালয়কে জানিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, পাচার হয়ে যাওয়া অর্থ ফেরত আনার ফলে ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে সরকারের নিট ঋণ গ্রহণের পরিমাণ কমে আসছে। গত ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারী খাত থেকে নীট ঋণ গ্রহণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ হাজার ৫৬৬ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেছেন, কোন ব্যক্তি যদি বিদেশের কোন ব্যাংকে অর্থ জমা রাখেন তাহলে গ্রাহকের গোপনীয়তার স্বার্থে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কোন তথ্য দেয় না। পাচারকারী স্বেচ্ছায় ফেরত দিলেই ঝামেলা সবচেয়ে কম।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এ প্রসঙ্গে বলেছেন, পাচার করা অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সংশ্লিষ্ট দেশ বা দেশসমূহের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক বা বহুপাক্ষিক চুক্তি থাকতে হবে নতুবা বাংলাদেশ সরকারকে সংশ্লিষ্ট দেশকে অনুরোধ করতে হবে। এছাড়া যিনি অর্থ পাচার করেছেন তার মাধ্যমেও ফেরত আনা যেতে পারে। এক্ষেত্রে শেষোক্ত প্রক্রিয়াটি ব্যবহার করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
এর আগে পাচার করা অর্থ ফিরিয়ে আনার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনসহ সরকারের বিভিন্ন এজেন্সি বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তা চায়। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, যে পরিমাণ অর্থ ফিরিয়ে আনা হয়েছে তা মোট পাচারকৃত অর্থের খুবই নগণ্য।
ইতিমধ্যে বিদেশের বিভিন্ন ব্যাংকে বেশ কয়েকজন রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ীর একাউন্ট পাওয়া গেছে। গত ২২ মার্চ জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এক চিঠিতে এই ধরনের ১৬টি একাউন্ট সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংককে অবহিত করে সহায়তা চায়। Source:দৈনিক ইত্তেফাক
Date:2007-04-29