শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা আজ হাইকোর্টে উত্থাপন করবে সরকার

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের করা মেঘনা ঘাট পাওয়ার প্লান্ট সাইট প্রিপারেশন প্রকল্প সংক্রান্ত দুর্নীতির মামলা বাতিলের আবেদনের উপর শুনানির জন্য আজ মঙ্গলবার পুনরায় হাইকোর্টে উত্থাপন করবে সরকার পক্ষ। সোমবার বিচারপতি শরীফউদ্দিন চাকলাদার এবং বিচারপতি মোঃ এমদাদুল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে মূল মামলাটির শুনানির জন্য কার্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত ছিল। কিন্তু শেখ হাসিনার পক্ষে তার আইনজীবী ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ হাইকোর্টের উক্ত বেঞ্চে মামলাটি শুনানি করতে অনীহা প্রকাশ করে মামলাটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দেয়ার অনুরোধ জানান। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত মামলাটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দেন। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এডভোকেট হেলালউদ্দিন মোল্লা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

মেঘনা ঘাট পাওয়ার প্লান্ট সাইট প্রিপারেশন প্রকল্প সংক্রান্ত দুর্নীতির মামলায় অপর অভিযুক্তরা হচ্ছেন সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম, সাবেক প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন ও কে এন এন ইসলাম। বিষয়বস্তু এক হওয়ায় আদালত অপর তিনটি আবেদনের ক্ষেত্রে একই আদেশ দেন। শেখ হাসিনার পক্ষে অপর আইনজীবী ব্যারিস্টার এম আমীর-উল-ইসলাম আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

তৎকালীন দুর্নীতি দমন ব্যুরো টাস্কফোর্স-৪-এর কর্মকর্তা মোঃ গোলাম মোস্তফা ২০০১ সালের ১১ ডিসেম্বর তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে রমনা থানায় মামলা দায়ের করেন। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০৯ এবং ১৯৪৭ সালের (২ নং আইন) দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলার এজাহারে বলা হয়, মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মতামত উপেক্ষা করে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে নিজে লাভবান হওয়ার জন্য এবং অন্যকে লাভবান করার জন্য মেঘনাঘাট পাওয়ার প্লান্ট প্রকল্পের ১ম টেন্ডারের সর্বনিম্ন দর ১২৩,৭৬,২৮,৩১৯ টাকার টেন্ডার বাতিল করে পুনরায় দরপত্র আহ্বানের নির্দেশ প্রদানের মাধ্যমে অন্য একটি চীনা প্রতিষ্ঠানকে ১৪১,৬৫,৩০,২৯৬ টাকায় কাজ প্রদান করেন। ফলে দরপত্রের সর্বনিম্ন দরদাতার পরিবর্তে দ্বিতীয় দরপত্রের সর্বনিম্ন দরদাতাকে কার্যাদেশ দেয়ার মাধ্যমে সরকারের ১৭,৮৯,০১,৮৯৭ টাকার আর্থিক ক্ষতিসাধন করা হয়েছে। এমতাবস্থায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে সরকারের আর্থিক ক্ষতিসাধনের মাধ্যমে উক্ত টাকা আত্মসাতের দায়ে সাবেক প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক মোঃ রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করা হয়। পরবর্তীকালে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুনঃতদন্ত শেষে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন, অধ্যাপক মোঃ রফিকুল ইসলাম ও কে এন এন ইসলামকে আসামি করে ২০০২ সালের ১৪ অক্টোবর চার্জশীট প্রদান করেন। এরপর ২০০২ সালের ১৭ অক্টোবর ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ আহমেদ জামিল মোস্তফার আদালতে মামলাটি শুনানির জন্য পেশ করা হয়। পরবর্তীকালে ২০০২ সালের ২ ডিসেম্বর শেখ হাসিনার পক্ষে মামলাটি খারিজের জন্য হাইকোর্টে একটি আবেদন দায়ের করলে আদালত মামলাটির সকল কার্যক্রমের উপর স্থগিতাদেশ প্রদান করেন এবং সরকারের প্রতি রুল জারি করেন। বর্তমানে সরকার পক্ষ মামলাটি হাইকোর্টে শুনানির জন্য উদ্যোগ নিয়েছে।

Source:দৈনিক ইত্তেফাক
Date:2007-05-15

1 Responses to শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা আজ হাইকোর্টে উত্থাপন করবে সরকার

  1. […] is filed under জাতীয় খবর. You can follow any responses to this entry through the RSS 2.0 feed. You can leave a response, or trackback from your own […]

এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান